অগ্রাধিকার আইন এবং অগ্রাধিকার আইনের প্রধান বিষয়গুলো 


অগ্রাধিকার আইন



অগ্রাধিকার আইন: একই জীবের একাধিক নামকরণজনিত সমস্যা এড়ানোর জন্য প্রথম প্রকাশিত নাম এবং এর প্রবর্তককে স্বীকৃতি দেওয়ার যে নিয়ম ট্যাক্সোনমিতে বিদ্যমান, তাকে অগ্রাধিকার আইন নামে অভিহিত করা হয়। জীবের নামতত্ত্বের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, অনেকক্ষেত্রে একই জীবগোষ্ঠীর জন্য একাধিক নাম প্রস্তাবিত হয়েছে। আবার একাধিক জীবগোষ্ঠীর জন্য কখনো একই নাম প্রস্তাব করা হয়েছে নামকরণের এই সমস্যা সমাধানের জন্য অগ্রাধিকার আইন অনুসরণ করা হয়।
অগ্রাধিকার প্রধান বিষয়: অগ্রাধিকার আইনের প্রধান বিষয়গুলো লিখা হলো:

১. অগ্রাধিকা জাইনের জাক বিজ্ঞানের নামকরণের একটা বিতর্কিত বিষয়। কারণ কোনো নতুন প্রজাতির নামকরণের সময় প্রজাতির শনাক্তকারী বৈশিষ্ট্য ও নতুন নামকরণের অন্যান্য নিয়মাবলি লিপিবদ্ধ করতে হয় এবং প্রখ্যাত বিজ্ঞানভিত্তিক বহুল প্রচলিত সাময়িকীতে প্রকাশ করতে হয়। টাইপ সংরক্ষণের নিয়ম থাকলে ও তা সঠিক সময় সঠিকভাবে প্রতিপালন করা হয় না বলে এই আইনটি এখানে অতি দুর্বল।

২. লিনিয়াসের বিখ্যাত পুস্তক Systema naturae এর সংশোধিত দশম সংস্করণ প্রকাশিত হয় ১৭৫৮ সালে। এই সাল পর্যন্ত অগ্রাধিকার আইন প্রযোজ্য হবে। পূর্বে প্রকাশিত কোনো নামকরণ গৃহীত হবে না।

৩. আন্তর্জাতিক নামকরণ অন্যতম প্রধান শর্ত হলো-নাম স্থির থাকায় অর্থাৎ একটা প্রাণীর একবার নাম করা হলে দ্বিতীয়বার এর নামকরণ করা যাবে না। অগ্রাধিকার আইনে অজ্ঞতাবশতঃ দ্বিতীয়বার তিনি হবেন উক্ত প্রাণীর নামকরণের জনক। কিন্তু যদি পূর্বে প্রদত্ত নামকরণের জনকেরা অসম্পূর্ণ বিবরণসহ প্রাণীর।

৪. নামকরণ করেন, সে সকল ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ ভুলের সম্ভাবনা আনয়ন করতে পারে। ৫. টাইপ উল্লেখ না থাকার কারণে নামকরণকৃত প্রাণীর সম্পূর্ণ বিবরণে প্রাণীটি দেখতে কিরূপ নতুন নামকরণের যোগ্য কিনা। তা অগ্রাধিকার আইন দ্বারা সিদ্ধ করা দুরূহ।

৫. এই নিয়মানুসারে যদি একটা প্রাণী গণ বা প্রজাতির নামকরণ দুই বা ততোধিক বার করা হয়ে থাকে। তবে প্রথমে প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে এবং প্রথম নামকরণে জনকই উল্লেখিত জীবের নামকরণের জনক হবেন।

৬. এই আইনে নিয়ম আছে যে, বহুদিন ধরে ব্যবহৃত নামটি নির্দিষ্ট শর্তাধীনে গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়।

৭.প্রথমে প্রদত্ত নামে বানানটি অক্ষুন্ন রাখাও অগ্রাধিকার আইনের পূর্বশর্ত।
৮. এই আইনে পূর্বে প্রচলিত প্রদত্ত নামের বানান ভুল থাকলে তা সংশোধন করার নিয়ম প্রচলিত আছে।
উদাহরণ- Spheandon → Sphenodon.
৯. যেহেতু একটা প্রাণী ও উদ্ভিদের একটি নামই থাকবে। সুতরাং এ আইনে প্রতিটি জীবের একটি নামকরণকে নিশ্চিত করবে।
১০. এই আইন পুরাতন ও পূর্বে প্রদত্ত নামক স্বীকৃত দেয়।
১১. এই আইন অনুসারে আন্তর্জাতিক কমিশন কোনো প্রাণীর নামকরণের পর প্রাণীটিকে প্রাণিজগতে নির্দিষ্ট স্থানে স্থাপনের ক্ষমতা সংরক্ষণ করে।
১২. বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখার সম্পূর্ণ বিবরণ যুক্ত তথ্য ছাড়া গৃহীত হয় না কিন্তু অগ্রাধিকার আইন শুধুমাত্র পুরাতন হওয়ায় তা গৃহীত হয়।

১৩. পহেলা জানুয়ারি ১৭৫৮ সালের পূর্বে প্রদত্ত প্রাণীর নামকরণ গৃহীত হবে না। নামকরণের নীতিমালা অনুসারে ঐ না এগুলো মূল্যহীন। 

১৪. যদি কখনো একটি প্রাণীর দুই বা ততোধিক নাম প্রদান করা হয় তখন তাকে সিনোনেইম (Synonym) বলে। এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার আইনের নীতিমালা অনুসারে সর্বপ্রথম প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে। যাকে সিনিয়র সিনোনেইম বলে এবং অন্যগুলোকে জুনিয়র সিনোনেইম বলে।
১৫. যদি ভুলক্রমে একটি প্রাণীর দুটো নাম দেওয়া হয় এবং দুটো নামই পরিচিত হয়ে পড়ে, অগ্রাধিকার আইন অনুসারে প্রথমে প্রদত্ত নামটি গৃহীত হবে। দ্বিতীয় নামটি ব্রাকেট বিজ্ঞানীদের পরিচয় না ঘটে। () চিহ্নসহ সংস্থাপন করতে হবে, যতদিন পর্যন্ত প্রথম নামের সাথে সাথে
১৬. একই নাম যদি ভিন্ন ভিন্ন প্রাণীর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় তাকে হোমোনেইম বলে। এক্ষেত্রেও প্রাণিবিজ্ঞানের আন্তর্জাতিক নিয়মানুসারে এবং অগ্রাধিকার আইনের বলে প্রথমে প্রদত্ত প্রাণীটির নাম গৃহীত হবে যাকে সিনিয়র হোমোনেইম বলে এবং অন্যগুলো বা Junior homonym গুলো ব্যবহার করা হতে বিরত থাকতে হবে।
উল্লেখিত নিয়ম ছাড়াও অগ্রাধিকার আইনে আরও কতিপয় প্রধান নিয়ম রয়েছে, যেগুলো উপরে উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু সেগুলোকে প্রাণীর নামকরণের ক্ষেত্রে এবং অগ্রাধিকার আইন অনুসারে মূল্যহীন নয়। করা হলেও প্রথম নামটি গৃহীত হবে।

Leave a Comment